Vidyasaarathi Scholarship: কথায় বলে, এক লাফেই এক লাখ! ঠিক এমনটাই বাস্তবায়িত করেছে এই স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপে আবেদন করলে পেয়ে যেতে পারেন প্রায় এক লক্ষ টাকা! কী, অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন ঠিক শুনছেন কিনা? হ্যাঁ, একেবারেই ঠিক শুনছেন। বিদ্যাসারথী স্কলারশিপে আবেদন করলেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার অধিকারী। কিন্তু তার জন্য লাগবে বেশ কিছু শর্ত। আজকের প্রতিবেদনে থাকবে এই স্কলারশিপের উদ্দেশ্য, সুবিধা এবং আবেদন করার পদ্ধতি নিয়ে নানা ধরনের গুরুত্বপুর্ন তথ্য।
Vidyasaarathi Scholarship: কথায় বলে, এক লাফেই এক লাখ! ঠিক এমনটাই বাস্তবায়িত করেছে এই স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপে আবেদন করলে পেয়ে যেতে পারেন প্রায় এক লক্ষ টাকা! কী, অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন ঠিক শুনছেন কিনা? হ্যাঁ, একেবারেই ঠিক শুনছেন। বিদ্যাসারথী স্কলারশিপে আবেদন করলেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার অধিকারী। কিন্তু তার জন্য লাগবে বেশ কিছু শর্ত। আজকের প্রতিবেদনে থাকবে এই স্কলারশিপের উদ্দেশ্য, সুবিধা এবং আবেদন করার পদ্ধতি নিয়ে নানা ধরনের গুরুত্বপুর্ন তথ্য।
বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ (Vidyasaarathi Scholarship) কী?
আজকের শিশুরাই, গড়বে এক সুনিশ্চিত আগামী। তাই কোনো শিশুর শিক্ষা অর্জনে যাতে দারিদ্র্য পথের কাঁটা না হয়ে দাঁড়ায়, সেই বিষয়ে বরাবরই সরকার ওয়াকিবহাল থাকে। শিক্ষাখাতে খরচের জন্য, সমাজের পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলিকে নানা সময় বিভিন্ন স্কলারশিপের মাধ্যমে বেশ কিছু পরিমাণ মাসিক বৃত্তি প্রদান করা হয়। তার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য হল বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ।
Protean eGov Technologies Limited নামক এক সংস্থা পরিচালিত এই প্রকল্পের মাধ্যমে, দেশ জুড়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী উপকৃত হয়েছে। বলা বাহুল্য, তাঁরা বেশিরভাগই দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে তাঁরা মূলত বেসরকারি সংস্থার অধীনে থাকা কার্যকরী স্কলারশিপগুলির আওতায় আবেদন করতে পারে।
প্রসঙ্গত, বিদ্যাসারথীতে বিপুল সংখ্যক কর্পোরেট সংস্থার স্কলারশিপকেও তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ছাত্র ছাত্রীরা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার অধীনে থাকা কার্যকরী স্কলারশিপ সম্পর্কে অবগত থাকতে পারে না, কিন্তু বিদ্যাসারথী সেই সকল সমস্যাকে দূরীভূত করতে সহায়ক হয়েছে। এই বিদ্যাসারথী পোর্টালের মাধ্যমে ছাত্র ছাত্রীরা তাঁদের পছন্দমত স্কলারশিপে আবেদন জানাতে সমর্থ হয়।
বিদ্যাসারথী স্কলারশিপের (Vidyasaarathi Scholarship) উদ্দেশ্য:
- যে সকল দরিদ্র পরিবারের অন্তর্ভুক্ত, মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা দারিদ্র্যের কারণে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পিছপা হয়, তাঁদের কথা ভেবেই বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ বৃত্তি প্রদান করে।
- এই ধরনের স্কলারশিপগুলির লক্ষ্য হল, সমাজের প্রতিটি স্তরের, প্রতিটি প্রান্তের শিক্ষার্থীর জীবনে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া। কেউ যাতে অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে না যায়, তার দায়িত্ব নেয় এই স্কলারশিপ প্রথা। সুতরাং প্রতিটি শিক্ষার্থীকে শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার পেছনে অন্যান্য স্কলারশিপের মত বিদ্যাসারথীর ভূমিকাও অনস্বীকার্য।
- শুধু শিক্ষার সুযোগ নয়, বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ ছাত্র ছাত্রীদের দক্ষতা উন্নয়নেও যথেষ্ট সহযোগিতা করে। উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য শিক্ষার্থীরা এমন অনেক প্রশিক্ষন নিতে চায়, যেখানে অর্থের অভাবে অংশগ্রহন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই এই ধরনের স্কলারশিপ বৃত্তি প্রদান করে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নের পথকেও সুগম করে তোলে।
- যে সকল শিক্ষার্থী মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের পর দারিদ্র্যের কারণে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে না, তাঁদের বৃত্তি প্রদান করে উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য উৎসাহী করে তোলে বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ।
- এই ধরনের স্কলারশিপ সুশিক্ষা অর্জনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য, শিক্ষার্থীরা যেমন লাভবান হয়, তেমন তাঁরা দক্ষ ও শিক্ষিত হলে লাভবান হয় সমাজ। তাই সামগ্রিক ভাবে সমাজের কল্যাণ সাধন করাই হল এই ধরনের স্কলারশিপের বিশেষ উদ্দেশ্য।
বিদ্যাসারথী স্কলারশিপের (Vidyasaarathi Scholarship) সুবিধা:
- এই পোর্টালে আবেদন করলে, আবেদনকারী শিক্ষাখাতের যেকোনো খরচের জন্য অনুদান পায়। টিউশন ফি, বই পত্র, হোস্টেল ফি ইত্যাদির জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ। তাই অর্থের অভাবে শিক্ষার্থীর লেখাপড়া মাঝ পথে থেমে যায় না।
- যে কোনো স্ট্রিম থেকেই স্বাচ্ছন্দ্য মত এই স্কলারশিপে আবেদন জানাতে পারে ছাত্র ছাত্রীরা।
- পড়াশোনার অগ্রগতির সঙ্গে শিক্ষার্থীরা চায় নিজেদের আরও গড়ে তুলতে, সে কারণে প্রয়োজন পড়ে প্রশিক্ষণের। এই স্কলারশিপে প্রাপ্ত অনুদানের ফলে সেই শখ পূরণ করতে পারে শিক্ষার্থীরা।
- যে সকল ছাত্র ছাত্রী আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল না হওয়ার দরুন পছন্দমত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারে না, তাঁরা এই স্কলারশিপে আবেদন করলে সহজেই ইচ্ছে পূরণ করতে পারবে।
- মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপ থেকে অনুদান পেয়ে উপকৃত হলে, তাঁদের অন্যের ভরসায় থাকতে হয় না। নিজের খরচ নিজেরাই বহন করতে সচেষ্ট হয়।
বিদ্যাসারথী স্কলারশিপে কত টাকা অনুদান প্রদান করা হয়?
অন্যান্য সুবিধার মত এই স্কলারশিপে অনুদান প্রক্রিয়াটিও বেশ লোভনীয়। শিক্ষার্থী কত অনুদান পাবে তা নির্ভর করে সে কোন স্কলারশিপে আবেদন জানাচ্ছে তার ওপর। তবে বেশ কিছু স্কলারশিপে 50,000 থেকে 1 লাখ পর্যন্ত পাওয়া যায়। এমনকী এর বেশিও অনুদান পেয়েছে বেশ কিছু ছাত্র ছাত্রী।
বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ (Vidyasaarathi Scholarship) কারা আবেদন করতে পারবে:
- যে কোনো বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছাত্র ছাত্রীই এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে।
- মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোলেই আবেদন করা যাবে এই স্কলারশিপে।
- সংখ্যালঘু থেকে শুরু করে জেনারেল ক্যাটাগরির ছাত্রছাত্রীরাও আবেদন করতে পারে এই স্কলারশিপে।
- পারিবারিক উপার্জন বার্ষিক পাঁচ লক্ষ টাকা বা তার কম হলে করা যাবে আবেদন।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বাধ্যবাধকতা নেই, তবে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৫% নম্বর পেলেই আরও সুষ্ঠু ভাবে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
- যেহেতু এটি বেসরকারি স্কলারশিপ, তাই অন্যান্য স্কলারশিপে আবেদন করা থাকলেও এখানে আবেদন করতে সমস্যা হবে না।
বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ (Vidyasaarathi Scholarship) এ আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি
- আবেদনকারীর পূর্ব পরীক্ষার শংসাপত্র
- সচিত্র পরিচয় পত্র (আধার কার্ড/ প্যান কার্ড/ ভোটার কার্ড/ মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড/ বার্থ সার্টিফিকেট)
- ঠিকানার প্রমাণপত্র (আধার কার্ড/রেশন কার্ড ইত্যাদি)
- ব্যাংকের পাসবইয়ের প্রথম পাতার স্ক্যান কপি (নিজের নামে)
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রমাণ (রিসিপ্ট কপি)
- পঠনরত প্রতিষ্ঠানের ফিজ স্ট্রাকচারের নথি
- পারিবারিক উপার্জনের প্রমাণপত্র
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ (Vidyasaarathi Scholarship) এ আবেদন জানানোর ঠিকানা
বিদ্যাসরথী স্কলারশিপের জন্য খুব সহজেই আপনি ফোন থেকেই আবেদন জানাতে পারবেন।
- https://www.vidyasaarathi.co.in/Vidyasaarathi/ লিংক খুলে বিদ্যাসারথীর অন্তর্ভুক্ত যেকোনো পছন্দমত স্কলারশিপে আপনার নাম নথিভুক্ত করতে পারেন।
- আবেদন করার জন্য “Apply for Scholarship” অপশনে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর দুটি অপশন দেবে, লগইন এবং রেজিস্টার। আবেদনকারী প্রথমবারের জন্য আবেদন করলে অবশ্যই তাঁকে রেজিস্টার করতে হবে।
- রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে ইমেল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন অপশনে ক্লিক করে “Fill up Aplication” এ প্রবেশ করতে হবে।
- সেখানে নির্দেশ মত ফর্ম ফিলাপ করে “save” করে দিয়ে ইচ্ছেমত স্কলারশিপ খুঁজে সেখানে আবেদন জানিয়ে দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, বারবার এই ওয়েবসাইটে নিজের ইমেল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে স্কলারশিপের স্ট্যাটাস চেক করতে হবে। স্কলারশিপ স্ট্যাটাসে “Approved” লেখাটি আসলে বুঝতে হবে, কিছুদিনের মধ্যেই টাকা ঢুকে যাবে ব্যাংকে।
বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ স্কিমের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক:
বিদ্যাসারথী স্কলারশিপ স্কিমের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিঙ্ক
বিদ্যাসারথী স্কলারশিপের আবেদন করার লিঙ্ক
উপসংহার:
বিদ্যাসারথি স্কলারশিপ(Vidyasaarathi Scholarship) হলো শিক্ষার্থীদের জন্য এক অনন্য উদ্যোগ, যা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে আরও সহজ ও সম্ভাবনাময় করে তোলে।বিদ্যাসারথি স্কলারশিপ শুধু একটি আর্থিক সহায়তা নয়, এটি শিক্ষার প্রতি এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার একটি উদ্যোগ। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী তাদের পড়াশোনার স্বপ্ন পূরণ করতে পারছে।
এই স্কলারশিপের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনার খরচের একটি বড় অংশ মেটাতে পারে, যা তাদের স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করে। বিদ্যাসারথি স্কলারশিপ প্রকল্পটি অত্যন্ত সহজলভ্য যা শিক্ষার্থীদের জন্য আবেদন প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে। সঠিক তথ্য ও যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করলে এই স্কলারশিপ শিক্ষার্থীদের জীবনে এক নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিতে পারে। তাই যারা সত্যিই উচ্চশিক্ষা লাভে আগ্রহী কিন্তু আর্থিকভাবে সঙ্কটে রয়েছেন, তাদের জন্য বিদ্যাসারথি স্কলারশিপ একটি আশার আলো।এটি একটি উৎসাহ, একটি মানসিক শক্তি। প্রযুক্তিনির্ভর এই প্ল্যাটফর্ম শিক্ষার্থীদের সুবিধাজনকভাবে আবেদন করার সুযোগ দেয়, যা শিক্ষা গ্রহণের পথে এক বিরাট সহায়ক শক্তি।