ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ: মাসে মাসে পাবেন ২২০০ টাকা করে বৃত্তি, কারা পাবেন এমন সুযোগ জানুন বিস্তারিত

Indusland Bank Scholarship: কথায় আছে “ইচ্ছা থাকলেই উপায় বের হয়” যেসব গরিব ও মধ্যবিত্ত ছাত্র- ছাত্রীরা আর্থিক অনটনের কারণে পড়াশোনা করতে পারছেন না তাদের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ দিয়ে থাকে রাজ্য বা কেন্দ্র সরকার।

যাতে করে উচ্চশিক্ষা অর্জনে তাদের কোনও ভাবে পিছুপা না হতে হয়, এবং তারা যাতে উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারে সেই জন্য ইন্দুসিন্দ ব্যাংক নিয়ে এসেছে ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ।

আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করব এই ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ(Indusland Bank Scholarship) সম্বন্ধে। এই ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ কি? এই ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ এর উদ্দেশ্য ? এই ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ থেকে আপনারা কতটা করে পাবেন ? এবং এই স্কলারশিপে আপনারা কিভাবে আবেদন করবেন ? এই সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য পেয়ে যাবেন এই প্রতিবেদনটিতে।

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপ আসলে কি?
What is the Indusland Bank Scholarship?

যে সকল মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ইচ্ছা থাকলেও উচ্চ শিক্ষার জন্য অগ্রসর হতে পারে না, তাঁদের কথা ভেবেই কেন্দ্র সরকার প্রণয়ন করেছেন ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ। ইন্দুসিন্দ ব্যাংক প্রদত্ত এই স্কলারশিপ মূলত সেই সকল মেধাবী ছাত্র ছাত্রীর জন্য, যাঁরা সবে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছে, কিন্তু আর্থিক অনটন তাঁদের উচ্চ শিক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই পারিবারিক দরিদ্রতা যাতে উচ্চ শিক্ষা লাভে কোনও সমস্যা না সৃষ্টি করে, তার জন্য মুস্কিল আসান হয়েছে ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপ।

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপের উদ্দেশ্য:
Objectives of Induslnd Bank Scholarship:

  • দেশের আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলির মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের, উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তি প্রদান করা
  • যথাযথ শিক্ষার প্রভাবে যাতে সমাজে অর্থ সামাজিক পরিকাঠামো মজবুত থাকে সেই দিকে নজর রাখা
  • ছাত্র ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তোলা, ও ভবিষ্যতে দেশের উন্নতি সাধনের জন্য প্রস্তুত করা।

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপের সুবিধা:
Benefits of IndsuInd Bank Scholarship:

মাসিক বৃত্তি প্রদান – এই স্কলারশিপে ছাত্র ছাত্রীরা মাসিক ৬০০-২২০০ টাকা পর্যন্ত পেতে পারে। যার ফলে তাঁরা সহজেই তাঁদের শিক্ষাখাতের সকল খরচ বহন করতে সমর্থ হয়।

উচ্চ শিক্ষা লাভে অগ্রসর – দ্বাদশ শ্রেণির পর অনেকেই নিজের সুস্থ ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য নানা ধরনের কোর্স করে থাকে। সেই সকল কোর্স অনেক ক্ষেত্রে ব্যয়বহুল হয়। তাই অর্থের পরিমাণ উচ্চ শিক্ষায় যাতে বাধ না সাধে সে কারণে এই স্কলারশিপ বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

স্বাবলম্বী হতে পারা – যে সকল ছাত্র ছাত্রীর পরিবার সমাজের চোখে প্রান্তিক বা অনগ্রসর, তাঁরা এই স্কলারশিপের কল্যাণে তাঁদের স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পায়।

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপে(Indusland Bank Scholarship) কারা কারা আবেদন করতে পারবেন?

  • দ্বাদশ শ্রেণির পর, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, সায়েন্স, আর্টস, ল’সহ যে কোনো স্ট্রিম থেকেই এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যায়।
  • স্বীকৃত বোর্ড থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাঞ্ছনীয়।
  • উচ্চ মাধ্যমিকে কমপক্ষে ৮০% নম্বরের অধিকারী হতে হবে।
  • ছাত্র বা ছাত্রীকে অবশ্যই কোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত মহাবিদ্যালয়ের স্নাতক কোর্সে ভর্তি হতে হবে।
  • আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপের জন্যে আবেদন করার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস:
Documents required to apply for IndusInd Bank Scholarship:

  1. ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশন স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য বেশ কিছু নথি প্রদান করা আবশ্যক। সেগুলো হল,
  2. আবেদনকারীর পরিচয় পত্র (বার্থ সার্টিফিকেট/মাধ্যমিকের এডমিট কার্ড)
  3. আবেদনকারী স্কুল ছাড়ার প্রমাণপত্র
  4. আবেদনকারী দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফল
  5. আবেদনকারী তৎকালীন শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ
  6. আবেদনকারী বার্ষিক পারিবারিক উপার্জনের দলিল
  7. আবেদনকারী পাসপোর্ট সাইজের ছবি

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপেরআবেদন করার সঠিক পদ্ধতি :
The correct procedure to apply for IndusInd Bank Scholarship:

ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, “www.theindusindfoundation.org” লিংকে ক্লিক করে আবেদন জানাতে পারেন

এছাড়াও vidyaa.in ওয়েবসাইটে গিয়েও ফর্ম ডাউনলোড করতে পারেন

ফর্ম ফিলাপ করে অফলাইনে এই ঠিকানাতেও পাঠাতে পারেন।
The Trustee, Indusind Foundation
Hinduja House 171, Dr. Annie Besant Roa Worli, Mumbai- 400918 , Tel – 912224960707

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপ দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?
Why is the Indusind Bank Scholarship important for the country’s students?

  1. অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করে: স্কলারশিপ এর মাধ্যমে মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীরা মাসিক ৬০০ থেকে ২২০০ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে।
  2. উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে- দেশের যেই সমস্ত মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা যখন অর্থের অভাবে পড়াশোনা ছেড়ে দেবে বলে মনস্থির করে ঠিক সেই সময় এই স্কলারশিপ পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়।
  3. অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত- এই স্কলারশিপের আবেদন পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ,বাড়িতে বসেই আবেদন করা যায়, কোনো অফিসে যেতে হয় না।
  4. কম কাগজপত্রের ঝামেলা- ইজ স্কলারশিপ এ নথিভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করার পদ্ধতিতে খুব বেশি পরিমাণ জটিল ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয় না।সহজ ডকুমেন্টেশন, মৌলিক কিছু নথি জমা দিলেই আবেদন করা যায়।
  5. দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা পরিবারের জন্য সহায়ক- এই স্কলারশিপ চালু করা হয়েছে দেশের দরিদ্র কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য। যে সমস্ত শিক্ষার্থীদের পরিবারের বার্ষিক আয় ₹২ লক্ষ টাকার কম তারাই এই স্কলারশিপে নথিভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদনযোগ্য।
  6. ভবিষ্যতের জন্য আত্মনির্ভরতা গড়ে তোলে- এই স্কলারশিপের মাধ্যমে দেশের শিক্ষার্থীরা/ছাত্রছাত্রীরা দেশের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাধীনভাবে পড়াশোনা করে বিপুল পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে এবং নিজেদের এক সফল ও সুপ্রতিষ্ঠিত ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারে।
  7. ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা জমা- এই স্কলারশিপের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় সেই অর্থ কোনরকম মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই সরাসরি সুবিধাভোগীর অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।
  8. বিশ্ববিদ্যালয় বা পেশাগত কোর্সের ছাত্রদের জন্য বিশেষ সুবিধা- এই স্কলারশিপ এর মাধ্যমে শুধুমাত্র সাধারণ স্নাতক/Graduation এবং স্নাতকোত্তর/Post Graduation শিক্ষার্থীর এই সুবিধা পেয়ে থাকে তা নয়, ইঞ্জিনিয়ারিং, নার্সিং, মেডিকেল, ITI, পলিটেকনিক ইত্যাদি কোর্সের ছাত্রছাত্রীরাও এই স্কলারশিপ এর সুবিধা পেয়ে থাকে।
  9. মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ প্রদান করে- এই স্কলারশিপের আর্থিক সহায়তার কারণে শিক্ষার্থীদের মাথার ওপর থেকে আর্থিক সংকটের চাপ কমে যায়। এর ফলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় আরও মনোযোগী ও উৎসাহিত হয়ে ওঠে।
  10. সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখে – এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামের এই উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলোর ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে পারে, ফলে সামাজিক উন্নয়ন ঘটে।

উপসংহার :

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ হলো,মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীদের স্নাতক স্তরের পড়াশোনায় আর্থিক সহায়তা প্রদানের এক অনন্য উদ্যোগ। অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে যাদের পক্ষে উচ্চস্তরে পড়াশুনা চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায় তারা এই স্কলারশিপের মাধ্যমে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।

এই স্কলারশিপের এর মূল উদ্দেশ্য হলো দরিদ্র কিন্তু মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা করা এবং শিক্ষার সুযোগ কে গণতান্ত্রিকভাবে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীরা এই স্কলারশিপ এর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়ে থাকে।

এর ফলে এই স্কলারশিপ আর্থিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস ও ভবিষ্যৎ গড়ার পথে সহায়ক ভূমিকা পালন করে চলেছে। দেশের যেই সমস্ত প্রতিভা উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখে তাদের পাশে দাঁড়ায় ইন্দুসিন্দ ফাউন্ডেশন, শিক্ষা হোক সকলের অধিকার এটিই তাদের মূল লক্ষ্য।

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক:

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিঙ্ক

ইন্দুসিন্দ ব্যাংক স্কলারশিপের বিজ্ঞপ্তি দেখার লিঙ্ক

Leave a Comment