আলো স্কলারশিপ: এই স্কলারশিপে আবেদন করলেই শিক্ষার্থীরা পাবেন ১৭ হাজার ২০০ টাকা করে বৃত্তি

Aalo Scholarship: ভারতে প্রচুর মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। শুধুমাত্র আর্থিক অনটনের কারণে তাদের উচ্চশিক্ষা লাভের আশায় পূরণ হয়ে ওঠেনা। ছাত্র-ছাত্রীরা কয়েকটি স্কলারশিপের কথা জানে। কিন্তু সেগুলি ছাড়াও যে বেশ কিছু বেসরকারি স্কলারশিপের সুবিধা তারা পেতে পারে, এই তথ্য তাদের অজানা। আজ আমরা মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নিয়ে এসেছি নতুন একটি স্কলারশিপের খোঁজ। পশ্চিমবঙ্গের আর্থিকভাবে সুবিধা বঞ্চিত ছাত্রছাত্রীরা স্কলারশিপের মাধ্যমে মাসিক বৃত্তি পাবে।

আমরা এই প্রতিবেদনে কথা বলছি আলো স্কলারশিপের (Aalo Scholarship) সম্পর্কে। এই স্কলারশিপটি আলো চ্যারিটি অর্গানাইজেশনের তরফ থেকে চালু করা হয়েছে। মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে।

এই স্কলারশিপে কীভাবে আবেদন করবে? কারা এই স্কলারশিপে আবেদন করতে পারবে? এই স্কলারশিপ থেকে কত টাকা পাওয়া যাবে? এই ধরনের সব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে আজকের প্রতিবেদনে। আলো স্কলারশিপে (Aalo Scholarship) আবেদন করার আগে অবশ্যই এই প্রতিবেদনটি ভালোভাবে পড়ে নেবেন।

আলো স্কলারশিপ (Aalo Scholarship) কী ?

আলো স্কলারশিপ আলো চ্যারিটি অর্গানাইজেশনের তরফ থেকে চালু করা হয়েছে। যে সমস্ত মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা আর্থিক কারণে উচ্চশিক্ষার সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকতে বাধ্য হচ্ছে, তারা এই স্কলারশিপে আবেদন করতে পারবে। যোগ্য ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে সেই কারণে তাদের এই স্কলারশিপ প্রদান করা হয়ে থাকে‌। উচ্চশিক্ষা লাভ করার জন্য আর্থিক জোর থাকা ভীষণ দরকার। কিন্তু সবার সেই জোর থাকে না। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়ন করা হয়‌।

আলো স্কলারশিপের (Aalo Scholarship) উদ্দেশ্য :-

এই স্কলারশিপের কিছু নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে, সেগুলি হল-

১. এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামটি ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের পরিবারের মাথা থেকে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য যে খরচ হয় তার বোঝা হ্রাস করতে চায়।

২. মেধাবী ও যোগ্য ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে আর্থিক চিন্তাভাবনা ছেড়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে, সেই কারণে স্কলারশিপের সূচনা। এর ফলে তারা আর্থিক উদ্বেগ ছেড়ে পড়াশোনায় মন দিতে পারবে।

৩. আলো স্কলারশিপের মাধ্যমে আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা হয়ে থাকে। এই স্কলারশিপ মূলত সেই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হয়ে থাকে যারা আর্থিক অনটনের কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেনা।

৪. এই স্কলারশিপের মাধ্যমে যোগ্য ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষালাভ করতে পারে। তাদের পড়াশোনা করার প্রবল ইচ্ছা বাধা প্রাপ্ত হয় না।

আলো স্কলারশিপে (Aalo Scholarship) আবেদনের প্রয়োজনীয় নথি :-

এই স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য কিছু নথি তথা ডকুমেন্ট আপনাকে জমা করতে হবে। সেগুলি হল-

  1. অর্থনৈতিক অবস্থা যাচাই করার জন্য পারিবারিক আয়ের শংসাপত্র।
  2. পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হওয়ার প্রমাণপত্র হিসেবে ভোটার আইডি কার্ড বা আধার কার্ড অথবা আবাসিক শংসাপত্র।
  3. আবেদনকারীর অ্যাকাউন্ট নম্বর সহ ব্যাংক একাউন্টের বিশদ তথ্য।
  4. যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য শেষ পরীক্ষার মার্কশিট ও সার্টিফিকেট।

আলো স্কলারশিপে (Aalo Scholarship) আবেদনের যোগ্যতা :-

এই স্কলারশিপে আবেদন করতে গেলে শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকতে হবে। যোগ্যতার মানদন্ডে উত্তীর্ণ না হলে তারা আবেদন করতে পারবে না। আলো স্কলারশিপে আবেদন করার আগে এই সম্পর্কে জেনে নিন-

  • স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য শিক্ষার্থীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • পশ্চিমবঙ্গের স্কুলে আবেদনকারীকে পাঠরত হতে হবে।
  • যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা একাদশ শ্রেণীতে পাঠরত, কেবলমাত্র তারাই এই মাসিক বৃত্তি প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবে‌।
  • এই স্কলারশিপের আবেদন করার জন্য মাধ্যমিকের সফলভাবে উত্তীর্ণ হতে হবে।
  • এই স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ন্যূনতম 70 শতাংশ মার্কস পেতেই হবে।

আলো স্কলারশিপে (Aalo Scholarship) আবেদনের সুবিধা :-

এই স্কলারশিপে আবেদন করলে শিক্ষার্থীরা মাসিক বৃত্তি পাবে। এই স্কলারশিপে আবেদনের সুবিধা-

  • এই স্কলারশিপে আবেদন করলে শিক্ষার্থীরা বছরে প্রায় 7 হাজার 200 টাকা করে বৃত্তি পাবে।
  • শিক্ষার্থীদের আর্থিকভাবে সমস্যায় পড়তে হবে না।
  • এই বৃত্তি থেকে প্রাপ্ত টাকার মাধ্যমে তারা নিজেদের পড়াশোনা শেষ করতে পারবে।
  • তারা ঠিকঠাকভাবে পড়াশোনা করতে পারলে ভবিষ্যতে আর্থিকভাবে সচ্ছল হবে।

আলো স্কলারশিপে যোগ্য শিক্ষার্থীদের কীভাবে নির্বাচন করা হয় ?

আলো স্কলারশিপে আবেদন করলেই যে বৃত্তি পাওয়া যাবে, এমনটা নয়। একজন আবেদনকারীকে যোগ্য নির্বাচন করার জন্য তার মাধ্যমিকের মার্কস, পরিবারের বার্ষিক আয় সহ বিভিন্ন বিষয়ের দিকে নজর রাখা হয়।

আলো স্কলারশিপে (Aalo Scholarship) নির্বাচনের প্রক্রিয়া –

এই স্কলারশিপে আবেদন করার তিন থেকে চার মাসের মধ্যে সফল প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। যাদের নাম এই তালিকায় থাকে, তাদের ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়। সেখানেই তাদের সমস্ত নথি যাচাই করা হয়‌। আর বিশেষজ্ঞরা তাদের কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। ইন্টারভিউ পর্ব সমাপ্ত হওয়ার বেশ কিছুদিন পর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে চূড়ান্ত মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়। যাদের নাম সে তালিকায় থাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের ব্যাংক একাউন্টে ব্যক্তি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আলো স্কলারশিপে (Aalo Scholarship) আবেদনের প্রক্রিয়া :-

  1. সবার প্রথমে আলো চ্যারিটি অরগানাইজেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে লগইন করে আবেদন ফরমটি বের করতে হবে।
  2. এরপর সঠিক ও সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে আবেদন পত্রটি ফিল আপ করতে হবে।
  3. তারপর প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে‌।
  4. এরপর ফর্মটি যাচাই করে দেখতে হবে। কোন তথ্য ভুল থাকলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি ঠিক করতে হবে।
  5. এরপর সাবমিট অপশনে ক্লিক করতে হবে।

আলো স্কলারশিপে (Aalo Scholarship) নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা দেখার প্রক্রিয়া :-

সবার প্রথমে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে লগ ইন করতে হবে।

এরপর নির্বাচিত প্রার্থী দেখার অপশনে ক্লিক করতে হবে।

তোমাদের সামনে একটি নতুন পেজ খুলে যাবে। যেই বছরের তালিকা দেখতে চাও সেটি লিখে দিলেই pdf ফাইল ডাউনলোড করার অপশন চলে আসবে।

আলো স্কলারশিপ সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন:

  1. আলো স্কলারশিপ কোন্ সংস্থার তরফ থেকে দেওয়া হয়?

এই স্কলারশিপ আলো চ্যারিটি অর্গানাইজেশনের তরফ থেকে দেওয়া হয়।

  1. আলো স্কলারশিপে কত টাকা বৃত্তি পাওয়া যায়?

এই স্কলারশিপে বছরে প্রায় 7 হাজার 200 টাকা করে বৃত্তি পাওয়া যায়।

  1. কারা আলো স্কলারশিপে আবেদন করতে পারে?

কেবলমাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলে এই স্কলারশিপে আবেদন করতে পারবে।

  1. আলো স্কলারশিপের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট কোনটি?

আলো স্কলারশিপের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক:

আলো স্কলারশিপের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিঙ্ক

আলো স্কলারশিপে আবেদন করার লিঙ্ক

আলো স্কলারশিপে আবেদনের নাম চেক করার লিঙ্ক

উপসংহার

এই স্কলারশিপটি আলো চ্যারিটি অর্গানাইজেশনের তরফ থেকে চালু করা হয়েছে। মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে। এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামটি ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের পরিবারের মাথা থেকে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য যে খরচ হয় তার বোঝা হ্রাস করতে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি একটি বেসরকারি স্কলারশিপ প্রকল্প।

এই স্কলারশিপে আবেদন করতে গেলে শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। মাধ্যমিক পরীক্ষায় নূন্যতম 70 শতাংশ মার্কস নিয়ে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হলে আলো স্কলারশিপে তোমরা আবেদন করতে পারবে। এর দৌলতে শিক্ষার্থীরা বছরে প্রায় 7 হাজার 200 টাকা করে বৃত্তি পাবে। এই স্কলারশিপে আবেদন করার তিন থেকে চার মাসের মধ্যে সফল প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। যাদের নাম এই তালিকায় থাকে, তাদের ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়।

Leave a Comment